• ডাঃ লালা সৌরভ দাস,কনসালটেন্ট এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, এখন থেকে সিলেটের সোবহানীঘাটে ওয়েসিস হাসপাতালে ছুটির দিন বাদে বিকেল ৫টা - ৮টা রোগী দেখবেন।

  • শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলুন

    মানবদেহের সংক্রামক রোগসমূহ আমাদের দেহে প্রবেশ করে অপরিষ্কার পরিবেশে জীবনযাপনের জন্য। এমনকি সংক্রামক নয় এমন রোগসমূহও প্রবল আকার ধারন করে এমন পরিবেশে। তাই নিজের, পরিবারের এবং সমাজের সবার নিরাপত্তার স্বার্থে পরিষ্কার পরিছন্নতায় গুরুত্ব দিন।

  • শাঁকসবজি সহ পুষ্টিকর সুষম খাদ্যতালিকা মেনে খাবার গ্রহন করুন

    ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তের চর্বি বৃদ্ধি, দেহের ওজন বৃদ্ধি, ক্যান্সার সহ নানা সমস্যার সমাধান দিতে পারে সুষম খাদ্যতালিকা মেনে পরিমিত পরিমানে খাবার গ্রহনের অভ্যাসটি। এরই সাথে নিয়মিত ব্যায়াম, শারীরিক পরিশ্রম এবং পর্যাপ্ত ঘুম অত্যাবশ্যক।

  • বাসায় নিয়মিত ডায়াবেটিস পরিমাপের গুরুত্ব

    ডায়াবেটিস রোগীর নিজের রক্তের সুগার নিজে পরিমাপের গুরুত্ব অপরিসীম। একজন ডায়াবেটিস রোগী নিজের রক্তের সুগার মেনে নিজেই বুঝতে পারেন তা নিয়ন্ত্রনের মাঝে আছে কিনা এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তের সুগার অতিরিক্ত কমে যাওয়া) নির্ণয় করে তা প্রতিরোধ করতে পারেন।

  • 1st BES-MAYO Advance Course in Endocrinology in Bangladesh

    The mid of 2018 brings an exciting news for Bangladeshi Endocrinologists. Mayo Clinic, a nonprofit academic medical center based in Rochester, Minnesota, focused on integrated clinical practice, education, and research and also world's number one Endocrine center is going to arrange a "Advance Course in Endocrinology" in collaboration with Bangladesh Endocrine Society on 24th-25th January, 2019

এন্ড্রেনাল ইনসাফিসিয়েন্সিঃ প্রয়োজন স্টেরয়েড ব্যবহারে চিকিৎসক এবং জনসাধারনের সচেতনতা

“স্যার, শরীরটা খুব দুর্বল লাগে। মাথা ঘুরায় মাঝে মাঝে, বমি বমি ভাব। খাবার একদমই রুচি নাই। প্রেসার প্রায়ই কমে যায়। হাটতে গেলে মনে হয় পড়ে যাবো।”


নারীপুরুষ নির্বিশেষে এরকম Non-Specific শারীরিক লক্ষন নিয়ে রোগীরা আসে সকল শ্রেণীর ডাক্তারদের কাছেই। আমরা সবাই রোগীর হিস্ট্রির বিস্তারিত জানতে চাই, ড্রাগ হিস্ট্রি নেয়া হয়, ফিজিকাল এক্সামিনেসন করি, কিছু পরীক্ষানিরীক্ষার উপদেশ দেই। অনেকসময় নির্দিষ্ট কারন ধরা পড়ে, যেমনঃ রক্তশূন্যতা, কখনো ইলেক্ট্রলাইট ইম্বেলেন্স ইত্যাদি। আবার অনেক সময় কোন নির্দিষ্ট কারন খুজে পাওয়া যায়না প্রাথমিক পরীক্ষাসমূহে। এইসব রোগীরা কিছু কাউন্সিলিং, কিছু ভিটামিন আর এঞ্জিওলাইটিক ড্রাগ নিয়ে বিদেয় হয় চিকিৎসকদের কাছ থেকে। অনেকের আশানুরূপ উন্নতি না হওয়ায় ঘুরতে থাকে, চিকিৎসকদের দ্বারে দ্বারে।



Figure: Abdominal Stria
একটু ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যায় এধরনের রোগীদের একাংশের চেহারা অনেকটা গোলগাল, কারো কারো আবার সরু হাত পায়ের সাথে পেটের দিকে এসে অনেকখানি চর্বি। অনেকে হিস্ট্রি দেয় কবিরাজি ঔষধ খেয়ে এসেছে দীর্ঘদিন ধরে। কেউ আবার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের ভক্ত। কিছু রোগী আবার ফার্মেসীর দোকানদারের পরামর্শে বাত বা শ্বাসকষ্ট বা ওজন বাড়ানোর নানা চিকিৎসা ইতঃপূর্বে গ্রহন করে এসেছে বহুদিন। অনেকের ক্ষেত্রে আবার এমবিবিএস বা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সল্পদিনের ওষুধ নিজের ইচ্ছে অনুসারে দীর্ঘদিন খাবার হিস্ট্রি পাওয়া যায়। শারীরিক পরীক্ষার মাঝে কিছু রোগীর পেটের চামড়ার মাঝে খুজে পাওয়া যায় লাল-গোলাপি ছোপ, হাত পায়ের দুর্বলতা মাসল ওয়াস্টিং। ল্যাবের বেইজ লাইন ইনভেস্টিগেসনে পাওয়া যায় ইলিক্ট্রলাইট ইম্বালান্স, যেমনঃ হাইপোনেট্রিমিয়া।


হা, “এন্ড্রেনাল ইনসাফিসিয়েন্সি এবং ড্রাগ ইনডিউসড কুশিং সিনড্রোম” নিয়ে কথা বলছি। আমাদের দেশে এমবিবিএস ডাক্তার বাদে বাকি সবাই চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিশেষজ্ঞ হয়ে যাওয়াতে এই ধরনের রোগীর সংখ্যা নিতান্তই কম নয়। এই রোগীদের অথবা তাদের এন্টেন্ডেন্টদের প্রকৃত ডাক্তারের প্রতি এক ধরনের অনাসক্তি/বিরক্তি কাজ করে। তাই গুরুত্বপূর্ণ হিস্ট্রি গোপন করা থেকে শুরু করে ইনভেস্টিগেশনে অনাগ্রহ এধরনের সীমাবদ্ধতা সম্মুখীন হতে হয় চিকিৎসকদের। একইসাথে রোগীর non-specific শারীরিক লক্ষন, অভারট কুশিং সিনড্রোমের মতো চেহারার হুবহু সাদৃশ্য না থাকা এসব সীমাবদ্ধতায় থেকে “এন্ড্রেনাল ইন্সাফিসিয়েন্সি” ডায়াগনোসিস করার মতো উপযুক্ত ল্যাব সাপোর্ট, ঔষধ এবং এই রোগের ব্যাপারে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবও এখনো রয়ে গেছে। এইধরনের রোগীগুলোর তাই ভোগান্তির দিনের পর দিন চলতেই থাকে, অনেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তখন শারীরিক দুর্বলতার পুরোটা দোষ দেয়া হয় মানসিক সমস্যার উপর। কখনো কিছু রোগী ক্রাইসিস নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়, তাৎক্ষণিক ভাবে রোগীর ম্যানেজমেন্ট করা হলেও ফাইনাল ডায়াগনোসিসে পৌছতে সক্ষম হয়ে উঠা হয় না বেশিরভাগ কেসেই।


এক নজরে যদি সীমাবদ্ধতাগুলো দেখি, তাহলে নিজেদেরকে দিয়েই শুরু করতে হয়। এইধরনের রোগী সম্পর্কে সচেতনতার ঘাটতি আছে আমাদের অনেকেরই। আমাদের মাঝে অনেকেই, এমনকি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অনেকেই স্টেরয়েড ঔষধ প্রেস্রক্রাইব করার সময় রোগীকে এর অপকারিতা সম্পর্ক সচেতন করে তুলেন না। স্টেরয়েড ম্যাজিকাল ড্রাগ, দেয়া মাত্রই রোগী ভালো। এই ড্রাগগুলো যখন প্রপার কাউন্সিলিং ছাড়া শুরু করে বন্ধ করা হয়, তখন রোগীর শারীরিক উন্নতি সাময়িকভাবে কিছুটা স্থবির হয়ে পড়ে। ফলশ্রুতিতে দ্রুত শারীরিক সমস্যার সমাধানের আশায় রোগী ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই ক্রমাগত স্টেরয়েড গ্রহন করতে থাকেন। ডাক্তারদের অনেকেও জেনে কিংবা না জেনে স্টেরয়েড পুনঃপুন অথবা দিনের একাধিকবার ব্যবহার করে থাকেন। অনেকগুলো স্টেরয়েড দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে, প্রাইমারি ইন্ডিকেসন যদি ব্যাথা থাকে সেই ক্ষেত্রে হয়ত দিনের এক বেলা ঔষধটি প্রেস্রক্রাইব করাই যথেষ্ট ছিল। সেখানে দিনের সকালের সাথে রাতের বেলাও ভাগ করে স্টেরয়েড প্রেস্রক্রাইব করে শরীরের Hypothalamo-pituitary-adrenal Axis কে অধিকতর সাপ্রেস করে রোগীকে এড্রেনাল ইন্সাফিসিয়ন্সির দিকে এগিয়ে দেয়ার দায়ভার আমরা এড়াতে পারি না। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলা, যে বইপত্রে স্টেরয়েড ঔষধপত্র ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা মেনে সতর্কতার সাথে স্টেরয়েড প্রেস্ক্রাইব করার পরেও অনেক রোগী সম্পূর্ণ বা পারসিয়াল এন্ড্রেনাল ইন্সাফিসিয়েন্সিতে পড়ে যায়, যার কারন হিসাবে অনেকসময় কোন কোন স্টেরয়েডের দীর্ঘমেয়াদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং রোগীর শারীরিক অবস্থাকে ধরা হয়।


ডায়াগনস্টিক ল্যাবগুলোর হরমোনাল ইনভেস্টিগেশনের আরো খারাপ অবস্থা। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে যারা থাকেন, একটি সামান্য থাইরয়েড ফাংশন টেস্টের রিপোর্ট দেখে অনেক সময় মিলানো যায় না, আর এন্ড্রেনাল ইন্সাফিসিয়েন্সি ডায়াগনোসিস করার জন্য “Basal Cortisol” এবং “Synacthin Test” করার চেষ্টাতো দুরাশা। Synacthin Test এর জন্য Inj. Synecthin এর অতিরিক্ত দাম এবং ঘাটতি এই বিভাগে কাজ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত লক্ষ্য করি। সবশেষে কোয়াক প্র্যাকটিস এবং গ্রামেগঞ্জে স্টেরয়েডের অবাধ ব্যবহার এই সমস্যার সমাধানের পথের অন্যতম অন্তরায়।


একজন সহানুভূতিশীল কলিগের পরামর্শে এই পোস্টটি দেয়ার উদ্দেশ্য একটাই। আমরা চিকিৎসকরা যেন স্টেরয়েড ড্রাগগুলো খানিকটা সচেতনতার সাথে ব্যবহার করি এবং এর সুফলের সাথে কুফল নিয়ে রোগীদের আরেকটু সচেতন করি। যে রোগীর প্রয়োজন তার জন্য স্টেরয়েড অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহার যেন সংক্ষিপ্ত হয়, রোগীকে যেন এই ড্রাগ সম্পর্কে কাউন্সিলিং করা হয় এবং ব্যবহারের সময় রাতের বেলা স্টেরয়েড প্রেস্ক্রাইব করা থেকে পারতপক্ষে বিরত থাকি। কবিরাজি এবং হোমিওপাথিক ট্রিটমেন্টে আগ্রহী রোগীদের সহজবোধ্য ভাষায় কাউন্সিলিং করে এসবের সম্ভাব্য কুফল সম্পর্কে অবগত করার চেষ্টা করি। Non-specific Symptomes নিয়ে আসা রোগীদের কথা এবং ড্রাগ হিস্ট্রির ব্যাপারে বিশেষ ভাবে লক্ষ্য রাখি এবং সন্দেহ হলে এই ধরনের রোগীদের Non-Specific ট্রিটমেন্ট না দিয়ে প্রয়োজনে এই বিষয়ে অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে কিভাবে এন্ড্রেনাল ইন্সাফিসিয়েন্সি ডায়াগ্নসিস এবং Specific ট্রিটমেন্ট সম্পর্কে রোগীদের অবগত করি।


একজন চিকিৎসা নিতে এসে অন্য রোগের রোগীতে পরিনত হবার মতো করুন পরিনতি যেন বরন না করে, তার প্রতিরোধ আমাদের এই সামান্য সচেতনতাই হতে পারে অন্যতম পদক্ষেপ।
Share:

১৪ই নভেম্বরঃ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস

আগামীকাল, ১৪ই নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। 
ডায়াবেটিস নিয়ে রোগীসহ সর্বসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য নিয়ে দিবসটি আন্তর্জাতিক ভাবে পালন করা হয়ে থাকে। বর্তমানে অসংক্রামক রোগের তালিকায় ডায়াবেটিসের অবস্থান শীর্ষস্থানে। ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেসনের পরিসংখানে পৃথিবীর ৪২৫ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত এবং রোগীর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। জনসচেতনতা ছাড়া এই রোগের নিয়ন্ত্রন কোন ভাবেই সম্ভব নয়। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রোগীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় অনেকগুণ। অল্প বয়েসেই তাই দেখা দেয় হৃদরোগ, স্ট্রোক, চোখের মারাত্মক রেটিনোপ্যাথি, অনুভুতি কমে যাওয়া, পঙ্গুত্ব সহ নানা রোগ। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে না রাখলে, দিন দিন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতায় পরে চিকিৎসা ব্যয় বাড়তে থাকে। এতে করে বিঘ্নিত হয় পারিবারিক এবং সামাজিক জীবন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে তাই সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান আবশ্যক। 



 ২০১৮ সালের ডায়াবেটিস দিবসের প্রতিপাদ্য “পরিবার এবং ডায়াবেটিস”। সহজ করে বলতে গেলে ডায়াবেটিস শুধু রোগীর রোগ নয়, বরং গোটা পরিবারের রোগ। কিভাবে? 



মনে করা যাক, পরিবারে কোন সদস্য ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। গবেষণায় দেখা গেছে, পরিবারে রক্তের সম্পর্ক আছে এমন কারো ডায়াবেটিস থাকলে অন্য সদস্যের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেক গুণ বেড়ে যায়। মা এবং বাবা এমন কারো ডায়াবেটিস থাকলে সন্তান দের ডায়াবেটিস হবার ঝুঁকি দুই থেকে পাঁচগুণ বেড়ে দাড়ায়। তাই, পরিবারে কারো ডায়াবেটিস আছে, বা ধরা পড়া মানে গোটা পরিবারের জন্য সেটি সতর্ক সংকেত। এমতাবস্থায়, গোটা পরিবারের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানোর জন্য সঠিক জীবনযাত্রা এবং শারীরিক পরিশ্রম সহ ব্যায়াম ইত্যাদি আবশ্যক হয়ে দাড়ায়। 


আবার, ডায়াবেটিস রোগী পরিবারে থাকাকে খারাপ ভাবে নেবারও কোন কারন নেই। একজন রোগীর কাছে থেকে পরিবারের অন্য সদস্যরা রোগ সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠতে পারেন। রোগীর সাথে সাথে সুনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রায় অংশগ্রহনের মাধ্যমে নিজেদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমিয়ে নিয়ে আসতে পারেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে সকলেই ডায়াবেটিসের ঝুকিতে আছেন, তাই পরিবারের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত সদস্য গোটা পরিবারের জন্য সচেতনতার নিদর্শন হিসাবে কাজ করেন। সেই সচেতনতা শুধু রুগীকে নয়, বরং গোটা পরিবারের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখতে সাহায্য করে।

আবার একথা ভুলে গেলে চলবে না, ডায়াবেটিস রোগীর রোগ নিয়ন্ত্রনে পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা রাখতে হয়। তাই, ডায়াবেটিক রোগী মানে চিকিৎসা এবং সুস্বাস্থ্য শুধু রোগীর নিজের নয়, বরং গোটা পরিবারের। 

তাই, পারিবারিক ভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন এবং প্রতিরোধে সচেতন হয়ে উঠুন এবং সচেতনতা অন্যদের মধ্যে পৌঁছে দিতে সহায়তা করুন।
Share:

World Osteoporosis Day (বিশ্ব হাড়ক্ষয় দিবস) ২০১৮

আগামীকাল, ২০শে অক্টোবর পালিত হতে যাচ্ছে World Osteoporosis Day (বিশ্ব হাড়ক্ষয় দিবস)। হাড় দেহের স্বাভাবিক কাঠামো গঠন করে। বিশ্বজুড়ে বিপুল সংখ্যক রোগী Osteoporosis/হাড়ক্ষয় এর কারণে সল্প আঘাতেই হাড় ভেঙে যাওয়া, হাঁটাচলার ক্ষমতা হ্রাস সহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। এই রোগীদের একটি বিশাল অংশ নিজেই জানেন না যে তাঁরা হাড় ক্ষয়জনিত সমস্যায় আক্রান্ত। বিশেষত বয়স্ক মহিলাদের এই ঝুঁকির পরিমাণ আরো বেশি। এই রোগের জন্য তাই প্রয়োজন সার্বজনীন সচেতনতা। 



হাড়ের ক্ষয় রোধে কিছু নির্দেশনা:

💪 নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম এবং পর্যাপ্ত ব্যায়াম অনুশীলন করা।

🥛 পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার গ্রহণ নিশ্চিত করা।

🚭 ধূমপান, মদ্যপান ইত্যাদি বর্জন করা।

🚥 শারীরিক কোনো সমস্যা, বয়সের কারণে বা রোগের কারণে হাড় ক্ষয় এর কোনো ঝুঁকি আছে কিনা চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে তা নির্ণয় করা।

🛡️ ঝুঁকিতে থাকলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে হাড় ক্ষয়কে প্রতিরোধ করা।


☑️ প্রতিপাদ্য তাই: Love your bones, Protect the future 📣
Share:

গর্ভকালীন হাইপোথাইরয়েডিজমঃ থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি

থাইরয়েড মানবদেহের জন্য একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অন্তঃক্ষরা (হরমোন তৈরি করে এমন) গ্রন্থি। এটি থাইরয়েড হরমোন নামক উপাদান রক্তে নিঃসরণ করে থাকে, যা মানব দেহের প্রতিটি কোষের স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্য একান্ত প্রয়োজন। এই হরমোন যখন স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যায় তখন যে সমস্যার উদ্ভব হয়, চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় সেটিকে বলা হয় হাইপোথাইরয়েডিজম।  

এই সমস্যায় ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ, এমনকি বৃদ্ধ কমবেশি সবাই আক্রান্ত হতে পারেন। 



স্বাভাবিক মানুষের হাইপোথাইরয়েডিজম এর লক্ষন সমূহঃ


১) শারীরিক দুর্বলতা,

২) ঠাণ্ডা পরিবেশে অস্বস্তি,

৩) পায়খানা কশা হওয়া,

৪) কাজেকর্মে উৎসাহ কমে যাওয়া,

৫) শরীরের ওজন বৃদ্ধি।

৬) মেয়েদের মাসিকের সাথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ইত্যাদি।




তবে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, মেয়েদের সন্তান ধারনের সময় এই হাইপোথাইরয়েডিজম সমস্যাটির ঝুকি। এই সময়ে উপরের লক্ষন প্রকাশ না পেয়েও মায়েরা হাইপোথাইরয়েডিজমের ঝুকিতে ভুগতে পারেন। আর এই হাইপোথাইরয়েডিজম থাকলে মেয়েদের গর্ভধারনের সময় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে গর্ভপাত ঝুকি অনেকগুন বেড়ে যায়। এমনকি হাইপোথাইরয়েডিজম অজানা থাকলে তা মেয়েদের গর্ভধারনেও বাঁধার সৃষ্টি করে থাকে। এটা জেনে রাখা প্রয়োজন যে গর্ভকালীন সময়ে খুব সামান্য থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতিই মায়ের অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভপাত, বাচ্চার বুদ্ধির বিকাশের সমস্যা সহ নানাবিধি জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। তাই এই সামান্য থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি সঠিক ভাবে নির্ধারণ এবং গর্ভকালীন সময়ে অথবা গর্ভধারনের আগে সঠিক এবং দ্রুত চিকিৎসা করে নিরাপদ গর্ভধারণ করা একান্ত জরুরী। 





গর্ভকালীন হাইপোথাইরয়েডিম বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনাঃ



১) পরিবারে কারো থাইরয়েডের সমস্যা অথবা থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি জনিত  রোগের লক্ষনসমূহ কারো থাকলে তিনি গর্ভধারনের আগেই হরমোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

২) যাঁদের হাইপোথাইরয়েডিজম সমস্যা টি আছে তাঁদের সবাইকে ডাক্তারের পরামর্শে পরিকল্পিত ভাবে গর্ভধারণ করতে হবে। নতুবা গর্ভপাতের ঝুকি অনেক বেড়ে যাবে। এধরনের রোগীর থাইরয়েড হরমোনের ট্যাবলেট নিয়মিত ভাবে গ্রহন করে বাচ্চা নিতে হবে এবং গর্ভধারন নিশ্চিত হওয়া মাত্র ওষুধের মাত্রা -২৫-৩০% বৃদ্ধি করে নিতে হবে।


৩) যাঁদের হাইপোথাইরয়েডিজম সমস্যাটি নেই এমন মায়েদের ক্ষেত্রেও প্রতিটি প্রেগ্ননেন্সির প্রথম তিন মাসের রুটিন চেক আপের সাথে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে থাইরয়েড হরমোনের পরীক্ষা (S. TSH) পরীক্ষাটি করতে হবে। পরীক্ষায় S. TSH: 4.0 mU/L এর বেশি আসলে হরমোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অন্য পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে হবে, নতুবা গর্ভপাতের ঝুকি অনেকগুণ বেড়ে যাবে। এখানে উল্লেখ্য যে, স্বাভাবিক রোগীর নরমাল S. TSH এর মাত্রা গর্ভকালীন সময়ে প্রযোজ্য হবে না। তাই  সঠিক ভাবে রোগ নির্ণয় ও তার সমাধানে এই বিশেষক্ষেত্রে হরমোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কোন বিকল্প নেই।



৪) যেসব মেয়েদের বারবার গর্ভকালীন সময়ে গর্ভপাত হচ্ছে তাঁদেরকেও থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি আছে কিনা তা পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে। 

৫) যেসব মায়েদের গর্ভকালীন সময়ে হাইপোথাইরয়েডের সমস্যাটি নতুন করে ধরা পড়েছে, তাঁদের বাচ্চা হবার ৬ সপ্তাহ পরে আবার পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে সমস্যাটির সাময়িকভাবে নাকি সারাজীবন চিকিৎসা প্রয়োজন হবে।



সবশেষে, নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে থাইরয়েড হরমোনজনিত মাতৃত্বকালীন সমস্যা সম্পর্কে জনসচেতনতার কোন বিকল্প নিই। তাই আমরা সবাই এই সমস্যার গুরুত্ব অনুধাবন করি এবং এটি সম্পর্কে সচেতন হই।
Share:

Announcement: Brand Name Change


Hello...

This is an announcement related to my Brand Name Change. It was previously named as "EndoCare". But most of the people failed to realize the what it stands for.

This is why, I'm going to change it in "Diabetes & Endocrine Health Care, BD" for better self explanatory brand name. Change will be applicable for Facebook page also. Thank you all.

Share:

ডায়াবেটিক রোগীর বাসায় নিয়মিত রক্তের সুগার পরিমাপের গুরুত্ব

একজন ডায়াবেটিক রোগীর নিজের নির্দিষ্ট সময় পরপর রক্তের সুগার পরিমাপের গুরুত্ব অপরিসীম। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, রোগী ডায়াবেটিক রোগীরা হুট করে একটি বা দুইবেলার অনিন্ত্রিত সুগারের রিপোর্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা বাড়ির আসে পাশের ঔষধের দোকানদারকে দিয়ে করিয়ে হাজির হন ডাক্তারের কাছে। এতে করে ডাক্তার অনেকক্ষেত্রেই বুঝতে সক্ষম হন না, রোগীর গড়পড়তা রক্তের সুগারের পরিমাপ কতো।

তাই, আদর্শ পদ্ধতিতে বর্তমানে বাসায় নিজে থেকে সুগার পরিমাপ করে তা লিপিবদ্ধ করা এবং সুগার ডায়রি বা রেকর্ডটি নিয়মিত ভাবে ডাক্তারের চেক-আপের সময় নিয়ে আসা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রেন গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসাবে কাজ করে।



এখন প্রশ্ন হচ্ছেঃ

কিভাবে বুঝব ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে আছে কি না?

নিচের ছবিতে প্রদত্ত চার্টটি লক্ষ্য করুন। একজন ভালো এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট ডায়াবেটিসের চিকিৎসা করার সময় রোগীকে তার সামগ্রিক পরিস্থিতি দেখে একটি রক্তের সুগারের টার্গেট নির্ধারণ করে দিবেন।


রোগীকে খাদ্যাভ্যাস, হাঁটাচলা, ব্যায়াম এবং নিয়মিত ওষুধপত্র গ্রহনের মাধ্যমে নিজের রক্তের সুগারকে নিয়ন্ত্রনমাত্রা মাঝে রাখতে হবে। সেটি একবেলা বা দুই বেলা নয়, প্রতিবেলার জন্যই নিয়মটি প্রযোজ্য। আদর্শ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন হবে তখনই যখন ২৪ ঘণ্টা রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রন মাত্রার ভিতরে থাকবে।

ডায়াবেটিক রোগীর নতুন ডায়াবেটিস বা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে আসার জন্য নতুন ওষুধ শুরু করার পরে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে আসতে  প্রায় ২-৪ সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। আদর্শ ভাবে নির্দেশনা পালনের ১ মাস পরেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না আসলে সে সেই ক্ষেত্রে চিকিৎসা পদ্ধতি পুনরায় নির্ধারণের জন্য এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।  

 কিভাবে বাসায় রক্তের সুগার পরিমাপ করবো?

বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন কোম্পানির সুগার মাপার মেশিন (Glucometer) আছে। তবে সুগার মাপার মেশিন কেনার সময় অপেক্ষাকৃত ভালো কোম্পানি এবং স্ট্রিপ পাওয়া যায় এমন মেশিন কেনাই ভালো। এরকম কয়েকটি ভালো মেশিন হচ্ছে, জনসন এন্ড জনসন কোম্পানির OneTouch মেশিন সমূহ, AccuCheck Glucometer ইত্যাদি।

কতদিন পর পর সুগার পরিমাপ করব? 

আপনার এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট আপনার চিকিৎসার ধরনের উপর ভিত্তি করে আপনাকে সপ্তাহে কতোদিন কতবার সুগার পরিমাপ করবেন তা নির্ধারণ করে দিবেন। সাধারনত অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে আপনাকে সপ্তাহে ২-৩ বার করে ১-২দিন অন্তর অন্তর দুই থেকে চারবেলা সুগার পরিমাপ করে দেখতে হবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে এসেছে কিনা।

সুনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে অন্তত এক বা দুই সপ্তাহ অন্তর অন্তর সুগার যাচাই করে দেখতে হবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে আছে কিনা।

ডায়াবেটিস নিচের মতো করে "সুগার ডায়রি" আকারে লিপিবদ্ধ করবেন এবং তা ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহনের সময় নিয়ে আসবেন।

সুগার কমে যাওয়ার সমাধান কি?


 বাসায় ডায়াবেটিস রোগীর নিজে নিজের সুগার পরিমাপের সুবিধা সমূহঃ

১) নিজের রোগ নিজে নিয়ন্ত্রনে ভূমিকা রাখা এবং নিজের প্রতি আস্থা জন্মানো।
২) সুগার কমে যাওয়ার সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা এবং তা প্রতিরোধ বা দ্রুত সমাধান।
৩) প্রতিবারের সুগারের রেকর্ড পর্যালোচনা করে ডাক্তারের কাছে আদর্শ ব্যবস্থাপত্র গ্রহনের নিশ্চয়তা।
৪) গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের শারীরিক ঝুকি থেকে মুক্ত থাকা।
৫) পর্যাপ্ত পরিমানে ডায়াবেটিসের ওষুধ সম্পর্কে ধারনা নিয়ে নিজের ইনসুলিনের ডোজ নিজেই কমানো বাড়ানো।



Share:

ইনসুলিন দিবেন কিভাবে?

আদর্শ নিয়মে ইনসুলিন গ্রহণের উপর ইনসুলিনের কার্যকারিতা নিহিত। তাই জেনে নিন কিভাবে দিতে হবে ইনসুলিন...


Share:

এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট (হরমোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক) এর ভূমিকা



মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্তঙ্গের মাঝে রয়েছে বিভিন্ন গ্রন্তি। এদের থেকে হরমোন নামক অত্যাবশ্যকীয় উপাদান রক্তে নিঃসরিত হয় যা জীবনযাপনের জন্য একান্ত জরুরী। তবে প্রায়শই এসব গ্রন্থি নানাবিধ সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি অথবা কম হরমোন নিঃসরণ করতে থাকে। তার ফলশ্রুতিতেই দেখা দেয় হরমোনজনিত নানান সমস্যা।



এন্ডোক্রাইনোলজি চিকিৎসাবিজ্ঞানের একটি বিশেষায়িত শাখা যা মানবদেহের হরমোনজনিত সমস্যা নিয়ে কাজ করে চলছে একজন এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট (হরমোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক) রোগীর বিভিন্ন হরমোনজনিত সমস্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।


Share:

Update from Evidence-based Medicine (For fellow Physicians): Role of Aspirin in Primary Prevention

Most of us, doctors use to have a preexisting suggestion set on our mind backed up by some incomplete data that, “Aspirin might have some role in primary prevention” (treating high risk patients with it before development of the disease, eg: Elderly patient with Diabetes, Hypertension, Dyslipidemia or Family history of Cardiovascular diseases but no prior Heart attack or stroke)

 



Current data: Over the last month, more that few clinical trials (ASPREE, ASCEND Trial, Arrive Study, Papers from NEJM) suggested by their data analysis, that aspirin has no role in primary prevention. Moreover, they might be linked with slightly higher mortality rate (higher association with ? Cancer, only one clinical study suggested that thought, further studies are required for confirmation). 




How to put this evidence in clinical use: Based on the current data, we might be able to shift our treatment plan for high risk patients to control the risk factors like diabetes, hypertension & dyslipidemia and life style modifications rather than putting them on aspirin at the beginning (Not so uncommon). These strategies have proven benefits on primary prevention.  

So, Aspirin to be provided as a part of secondary prevention (patient with existing/history of CVD), but not as a part of primary prevention plan.

Share:

বাংলাদেশঃ চিকিৎসা ব্যবস্থা, আশার আলো এবং কিছু আশঙ্কা

একনজরে বিগত এক মাসের স্বাস্থ্যখাত সংক্রান্ত সংবাদের হেডলাইনসমূহঃ


...২০১৮-২০১৯ইং শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল ভর্তিপরীক্ষায় ৫০০ আসনসংখ্যা বৃদ্ধি করে মোট সীটের সংখ্যা ৩৮১৮ তে উত্তীর্ণকরন।

...আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে নতুন করে আরও ৭ হাজার ডাক্তারের পদায়ন করা (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) 


...ডিসেম্বরে আরও ৫ হাজার ডাক্তার নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। 


...আগামী মাসের মধ্যে নতুন তিনটি (চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট) মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করা। 


...অচিরেই আরও নতুন চারটি মেডিকেল কলেজ ঘোষণা করা এবং আগামী বছর থেকে আর এমবিবিএস কোর্সে ২০০ নতুন সীট বৃদ্ধি করা।


নিঃসন্দেহে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নামমাত্র বেতনে কর্মরত ডাক্তারসমাজ, উচ্চশিক্ষায় ইচ্ছুক চিকিৎসকদের জন্য এবং মেডিকেল ভর্তিতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য আপাতদৃষ্টিতে সবগুলো সংবাদই আশার আলো বহন করে। 

ডব্লিউএইচও রেঙ্কিং-এ বাংলাদেশ হেলথ কেয়ার ৮৮তম



তথাপি প্রকৃত চিকিৎসাসেবা সহ অতীব সংবেদনশীল মেডিকেল গ্রেজুয়েট এবং পোস্টগ্রেজুয়েট শিক্ষার মান দেশের নিয়ন্ত্রনের প্রতি গুরুত্ব অনুধাবন, দেশের মেডিকেল এডুকেশনকে দেশের বাইরের সাথে "Standardization" করা এবং সর্বোপরি দেশের চাহিদা উপলব্ধি করে মেডিকেল কলেজ এবং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রতি সংশ্লিষ্টরা গুরুত্ব দিবেন, এটাই আশা রাখছি। নতুবা, এতো ভালোর পরেও দেশের চিকিৎসার মান কমে যাওয়ার সম্ভাবনাটাই প্রবল। 


তথ্যসুত্রঃ https://go.spyluv.com/2PFT7TE
Share:

1st BES-MAYO Advance Course in Endocrinology in Bangladesh

The mid of 2018 brings an exciting news for Bangladeshi Endocrinologists. Mayo Clinic, a nonprofit academic medical center based in Rochester, Minnesota, focused on integrated clinical practice, education, and research and also world's number one Endocrine center is going to arrange a "Advance Course in Endocrinology" in collaboration with Bangladesh Endocrine Society on 24th-25th  January, 2019.



 For the first time this event is going to happen in Bangladesh, which was only possible due to strong persistence of Bangladesh Endocrine Society. Prof. Faruque Pathan Sir, current president of Bangladesh Endocrine Society has previously stated that, "Mayo Clinic only agreed to arrange this type of program in Bangladesh as because we (Bangladesh Endocrine Society) have shown our strong determination and was able to fulfill the criteria for this sorts of large academic event." 



This is going to be one of the few events arranged by Mayo in South East Asian region and definitely will bring a new era of learning, sharing and promoting Endocrinology among the doctors, including Endocrinologists.

Information Regarding Program:
  • Date:  24th January (Day-1) Thursday and 
                    25th January (Day -2) Friday, 2019.

Day 1 Schedule



Day 2 Schedule

  • Venue: Pan Pacific Sonargaon, Dhaka Bangladesh

  •  Cell: +880 1826 200 665 


Registration for the program has already started and it's as cheap as 16000 BDT / 200USD for Members of  BES in earliest hours. International Registration is also available.



Lets hope, this event will help to create a platform of sharing endocrine knowledge and thoughts in Bangladesh.
Share:

ডায়াবেটিক রোগীর জন্য নির্দেশনা


) ডায়াবেটিস কি

- আমরা যেসব খাদ্য গ্রহন করি, তা অন্ত্রে পরিপাকের পর শর্করা জাতীয় খাবার থেকে গ্লুকোজ তৈরি হয় এবং তা রক্তের মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন কোষে স্থানান্তরিত হয়ে শক্তি তৈরিতে সহায়তা করে রক্তের গ্লুকোজ রক্ত থেকে কোষে স্থানান্তরিত হতে ইনসুলিন নামক একধরনের হরমোন একান্ত প্রয়োজন হয়, যা শরীরের অগ্নাশয়/পেনক্রিয়াস নামক অঙ্গেরবিটাকোষ  থেকে নিঃসরিত হয়ে থাকে
ডায়াবেটিস হল ইনসুলিনের ঘাটতি অথবা ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার সামগ্রিক পরিস্থিতি এতে করে রক্তের সুগার শরীরের কোষে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয় রক্তের সুগার প্রতিনিয়ত বাড়তি থাকতে থাকে এবং শরীরের কোষ সমুহের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়

-      রক্তের সুগার নির্দিষ্ট পরিমান বৃদ্ধি পাবার পর সামগ্রিক পরিস্থিতিকে ডায়াবেটিস হিসাবে চিহ্নিত করা হয় এবং রোগীকে ডায়াবেটিক রোগী হিসাবে চিকিৎসা প্রদান করা হয়ে থাকে





) ডায়াবেটিক রোগের লক্ষন কি?

একজন ডায়াবেটিক রোগী বিভিন্ন ধরনের সমস্যা নিয়ে ভুগতে পারেনঃ
সুনির্দিষ্ট লক্ষনঃ ) ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, ) অতিরিক্ত পানির পিপাসা লাগা, ) খুব বেশি ক্ষুধা পাওয়া ) যথেষ্ট পরিমানে খাবার পরেও শরীরের ওজন কমে যাওয়া ) ক্লান্তি দুর্বলতা বোধ করা

সুনির্দিষ্ট নয় এমন লক্ষন সমূহঃ ) ক্ষতস্থান শুকাতে বিলম্ব হওয়া ) চোখে কম দেখা ) বারবার চামড়ার সমস্যা জনিত রোগে আক্রান্ত হওয়া ) বার বার প্রসবের সমস্যা বা বাচ্চা নস্ট হয়ে যাওয়া

মনে রাখবেন, শতকরা ৫০% ডায়াবেটিক রোগীর কোন রকম সমস্যার লক্ষন ছাড়াই ডায়াবেটিস থাকতে পারে, এসব রোগীদের প্রায়শই সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে ডায়াবেটিস ধরা পরে থাকে

) কাদের ডায়াবেটিসের ঝুকি বেশি?
যে কেউ যে কোন বয়সে যে কোন সময় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন তবে নিম্নলিখিত শ্রেণীর লোকের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার ঝুকি বেশি
-      যাদের পরিবারে, যেমন মা বাবা বা রক্ত সম্পর্কিত নিকট আত্মীয়ের ডায়াবেটিস আছে
-      যাদের ওজন অনেক বেশি বা পেটের মেদ অনেক বেশি
-      যারা শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করেন না এবং নিয়মিত ব্যায়াম করেন না
-      যারা বহুদিন স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ গ্রহন করেন
-      যারা অধিক পরিমানে শর্করা জাতীয় খাদ্য দীর্ঘদিন ধরে গ্রহন করে আসছেন

) ডায়াবেটিস কি সারানো যায়?
চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির এই যুগেও কিছু সংখ্যক বিশেষ ধরনের ডায়াবেটিসকে বাদ দিলে বাকি সকল রোগীর জন্য ডায়াবেটিস সারা জীবনের রোগ তবে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহন করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখলে একজন ডায়াবেটিস রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে সক্ষম   

) ডায়াবেটিক রোগের ধাপ সমূহ কি কি?
স্বাভাবিক অবস্থা > অভুক্ত অবস্থায় গ্লুকোজ আধিক্য (Impaired Fasting Glucose) > শর্করা অসহিষ্ণুতা (Impaired Glucose Tolerance) > ডায়াবেটিস


ধাপ
অভুক্ত অবস্থায়
গ্লুকোজ খাবার দুই ঘণ্টা পরে
Normal
< ৬.১ মিমোল/লি
< ৭.৮ মিমোল/লি
Impaired Fasting Glucose
 ৬.১ – ৬.৯ মিমোল/লি
< ৭.৮ মিমোল/লি
Impaired Glucose Tolerance
< ৭.০ মিমোল/লি
৭.৮ – ১১.০ মিমোল/লি
Diabetes
=/> ৭.০ মিমোল/লি
এবং/অথবা =/> ১১.১  মিমোল/লি

ডায়াবেটিস রোগের আগের ধাপ সমূহে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হলে এবং রোগী পর্যাপ্ত খাদ্যভাস নিয়ন্ত্রন, জীবনযাত্রার পরিবরতন এবং ওজন কমানোর মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগকে প্রতিরোধ অথবা বিলম্বিত করতে প্রায়শই সক্ষম হবেন
 
) ডায়াবেটিস রোগের কি কি প্রকারভেদ?
সকল ধরনের ডায়াবেটিস রোগকে ভাগে ভাগ করা হয়েছে
) ধরন ১ (Type 1) ডায়াবেটিস
খ) ধরন ২ (Type 2) ডায়াবেটিস
গ) বিবিধ কারনভিত্তিক শ্রেণী
ঘ) গর্ভকালীন ডায়াবেটিস

ক) ধরন (Type 1) ডায়াবেটিসঃ এই ধরনের ডায়াবেটিস রোগী সম্পূর্ণ ভাগে ইনসুলিনের উপরে নির্ভরশীল এবং ইনসুলিনের ঘাটতিতে তাঁদের দ্রুত শারীরিক অবস্থার অবনতি এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এধরনের রোগ সাধারণত কম বয়সে ধরা পড়ে (<৩০ বছর) এবং সেই সময় অল্পদিনের মাঝে রোগীর “সুনির্দিষ্ট লক্ষন সমূহ” প্রকাশ পায় এবং শরীরের ওজন দ্রুত কমে যায়, রোগী প্রায়শই পেটে ব্যথা এবং অজ্ঞান হয়ে যান এবং প্রস্রাবের পরিক্ষায় “কিটোন/এসিটোন” বলে উপাদান প্রকাশ পায়। এধরনের লক্ষন নিয়ে কেউ প্রকাশ পেলে তাঁকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতাল/ডায়াবেটিক রোগীর চিকিৎসায় অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ সহ চিকিৎসা করাবেন। এধরনের রোগীর জীবনের কখনোই ইনসুলিন বন্ধ করা একদমই অনুচিত, এমনকি অসুস্থতার সময়েও রক্তের সুগারের সাথে পরিমাপ করে ইনসুলিন প্রয়োগ অব্যাহত রাখতে হবে, নতুবা “ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস” নামক মারাত্মক সমস্যা দিয়ে রোগী আক্রান্ত হতে পারেন। 

খ) ধরন ২ (Type 2) ডায়াবেটিসঃ এধরেনের ডায়াবেটিস অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ৩০ বছরের পরে হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে জীবনযাত্রা এবং খাদ্যভাস ইত্যাদির পরিবর্তনের ঝুকির কারনে ৩০ বছরের নিচেই এধরনের ডায়াবেটিস রোগী ধরা পড়ছে এবং দিন দিন তাঁদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই ধরনের রোগীর শরীরে আংশিক ইনসুলিন ঘাটতি এবং আংশিক ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। এতে করে তাঁদের শরীরে রক্তের সুগার বৃদ্ধি পায়। এই ধরনের রোগীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্থুলকায় হয়ে থাকে। এরা সম্পূর্ণ ভাবে ইনসুলিনের উপর নির্ভরশীল নয়। এদের অনেককেই শুধুমাত্র খাদ্যাভাস নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত ব্যায়ামের সাহায্যে চিকিৎসা করা সম্ভব। আবার সময়ের সাথে সাথে এদের চিকিৎসার জন্যেও ইনসুলিনের  প্রয়োজন হতে পারে।

গ) বিবিধ কারনভিত্তিক শ্রেণীঃ
·         জেনেটিক কারনে ইনসুলিন তৈরি কম হওয়া
·         জেনেটিক কারনে ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া
·         অগ্নাশয়/পেঙ্ক্রিয়াসের বিভিন্ন রোগ
·         ইনসুলিনের বিপরিতে অন্যান্য হরমোনের আধিক্য
·         কোন কোন সংক্রামক ব্যাধি
·         অন্যান্য কোন প্রতিরোধ ক্ষমতার জটিলতা

ঘ) গর্ভকালীন ডায়াবেটিসঃ অনেক সময় গর্ভবতী অবস্থায় প্রসূতিদের ডায়াবেটিস ধরা পরে। এদের অনেকের প্রসবের পর ডায়াবেটিস থাকে না। এই ধরনের জটিলতা কে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হয়।
(***বর্তমানে গর্ভকালীন সময়ের প্রথম তিন মাসের মাঝে ধরা পড়া ডায়াবেটিসকে পূর্বের ডায়াবেটিস হিসাবে গণ্য করা হয়, এবং দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ট্রাইমেস্টারের ডায়াবেটিসকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (জিডিএম) বলা হয়। এই ধরনের ডায়াবেটিক মায়ের গর্ভকালীন ঝুকি স্বাভাবিক মায়ের থেকে অনেক বেশি থাকে। ডায়াবেটিস এই সময়ে ভাল ভাবে নিয়ন্ত্রণে না থাকলে মা এবং বাচ্চা দুইজনেরই শারীরিক ঝুকির সম্ভাবনা থাকে। এমনকি গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ভাল হয়ে গেলেও পরবর্তী গর্ভ বা পরবর্তী জীবনে পুনরায় ডায়াবেটিস হবার ঝুকি থেকে থাকে। 

গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের একমাত্র চিকিৎসা ইনসুলিন। অন্যান্য ঔষধের গর্ভকালীন সময়ে এবং পরবর্তী জীবনে বাচ্চার শারীরিক ঝুকি নিয়ে বিশদ তথ্যউপাত্ত এখনো পর্যন্ত না থাকায় গর্ভকালীন সময়ে ইনসুলিনই হচ্ছে ডায়াবেটিক চিকিৎসার আদর্শ ঔষধ। 

ডায়াবেটিক মহিলাদের জন্য জ্ঞাতব্য

ডায়াবেটিক মহিলা যদি সন্তান ধারন করতে চান, তবে গর্ভবতী হওয়ার পূর্বে অবশ্যই তাঁকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে -৫ মাস আগে থেকেই খাওয়ার বড়ি বাদ দিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইনসুলিন নিয়ে ডায়াবেটিস উপযুক্ত পরিমানে নিয়ন্ত্রন (রক্তের HbA1c < ৬.৫%) নিচে এনে চিকিৎসকের অনুমতি সাপেক্ষে পরিকল্পিত ভাবে গর্ভধারন করতে হবে।
গর্ভকালীন সময়ে রক্তের সুগার খালি পেটে ৫.৩ মিমোল/লি এবং প্রতিবেলা খাবার দুই ঘণ্টা পরে ৬.৭ মিমোল/লি এর মধ্যে রাখতে হবে। অন্যথায় শিশুর শারীরিক বিকলাঙ্গতা সহ বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।


অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের ঝুকিসমূহঃ
·         পক্ষাঘাত/ স্ট্রোক
·         হৃদরোগ/ হার্ট এটাক
·         কিডনির কার্যক্ষমতা লোপ পাওয়া
·         পায়ের পচনশীল ক্ষত/ গ্রেংগ্রিন
·         চোখের ভিতরে রক্তক্ষরন/ চোখের দৃষ্টি কমে যাওয়া/অন্ধত্ব
·         পাতলা পায়খানা, চামড়ার সমস্যা, দাতের মাড়ির ইনফেকশন
·         যক্ষ্মা
·         যৌন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া
·         মহিলাদের মৃত শিশুর জন্ম দেয়া
·         বাচ্চার শারীরিক বিকলাঙ্গতা, অধিক ওজনের বাচ্চা জন্ম নেয়া
·         উচ্চ রক্তচাপ এবং রক্তের চর্বির সমস্যা দেয়া দেয়া। 

ডায়াবেটিক রোগের জরুরি অবস্থাঃ 

ক) হাইপোগ্লাইসেমিয়াঃ রক্তের শর্করার পরিমান কমানোর জন্য ডায়াবেটিক রোগীকে ট্যাবলেট বা ইনসুলিন দেয়া হয়ে থাকে। প্রয়োজনের থকে অতিরিক্ত ট্যাবলেট খাওয়া বা ইনসুলিন নেয়া অথবা হটাৎ করে খাওয়াদাওয়া অনেক কমিয়ে ফেলা অথবা অতিরিক্ত শারিরিক পরিশ্রমের কাজ করার ফলে মাঝে মাঝে রক্তের সুগার বেশি কমে যেতে পারে। এই ঘটনাকে বলা হয় হাইপোগ্লাইসেমিয়া। 
রক্তের সুগার কতো কমে গেলে সেটি হাইপোগ্লাইসেমিয়া?
-      রক্তের সুগার ৩.৯মিমোল/লিটার এর নিচে কমে গেলে সেটিকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হিসাবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।
হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষনসমূহঃ
-      ১) অসুস্থ বোধ করা
-      ২) খুব বেশি খিদে পাওয়া
-      ৩) বুক ধড়ফড় করা
-      ৪) হটাৎ করে শরীর ঘেমে যাওয়া
-      ৫) শরীর কাঁপতে থাকা
-      ৬) শরীর এবং মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা
-      ৭) অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষন প্রকাশ পেলে করনীয়ঃ
এই ক্ষেত্রে সম্ভব হলে দ্রত গ্লুকমিটার দিয়ে রক্তের সুগার পরিমাপ করে দেখতে হবে সেটি আসলেই হাইপোগ্লাইসেমিয়া কি না। হাতের কাছে গ্লুকমিটার না পাওয়া গেলে প্রমান ছাড়াই হাইপোগ্লাইসেমিয়ার চিকিৎসা করতে হবে।
·         রোগীর জ্ঞান থাকলে এবং রোগী মুখে খেতে পারলে রোগী/পরিবারের সদস্য চা চামচে ৪-৮ চা চামচ চিনি/গ্লুকোজ এক গ্লাস পানিতে গুলে খেয়ে নিবেন/খাইয়ে দিবেন।
·         রোগী অজ্ঞান হয়ে গেলে গ্লুকোজ ইনজেকশন হিসাবে রক্তের শিরায় দেবার জন্য দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করবেন। 

খ) রক্তের অতিরিক্ত সুগার বেড়ে গিয়ে জটিলতাঃ ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস এবং ডায়াবেটিক কোমা 

লক্ষনঃ
১) রক্তের সুগার খুব বেশি বেড়ে যাওয়া। ২) খুব বেশি পিপাসা পাওয়া। ৩) ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া। ৪) খুব অসুস্থ বোধ হওয়া ৪) বমি বমি ভাব হওয়া, ৫) ঝিমানো/ শরীর নিস্তেজ হয়ে আসা। ৬) দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস গ্রহন করা। ৭) জ্ঞান হারিয়ে ফেলা

করনীয়ঃ
o   ক) পানি শূন্যতা কমানোর জন্য অল্প অল্প করে বারবার লবন মিশ্রিত পানি খেতে পারেন।
o   খ) রক্তের সুগার পরিমাপ করে নিয়মিত ভাবে ইনসুলিন গ্রহন করে যেতে হবে। শুধুমাত্র হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তের নিচের দিকে থাকলে ইনসুলিনের পরিমান কমাতে হতে পারে। পুরোপুরি ভাবে ইনসুলিন বন্ধ করা যাবে না।
o   গ) সম্ভব হলে প্রস্রাবের পরীক্ষা করে সেখানে কিটোন বডি আছে কিনা তা দেখতে হবে।
o   ঘ) অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করতে হবে।

ডায়াবেটিক রোগীর চিকিৎসাঃ ডায়াবেটিক রোগীর চিকিৎসার তিনটি স্তম্ভ...
            ক) ডায়েটঃ খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রন।
            খ) ডিসিপ্লেইনঃ পরিকল্পিত জীবনযাপন এবং নিয়মিত ব্যায়াম অনুশীলন।
            গ) ড্রাগঃ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করে উপযুক্ত ঔষধ নিয়মিত ভাবে গ্রহন।

মনে রাখবেন, ডায়াবেটিস সারাজীবনের রোগ। এটি নিয়ন্ত্রনে ডাক্তারের ভূমিকার পাশাপাশি রোগীর ভূমিকা অপরিহার্য। রোগীর নিজের রোগ সম্পর্কে জানতে হবে এবং তা নিয়ন্ত্রণের জন্য নিজেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। অন্যথায় ডায়াবেটিক রোগীর রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রন কখনোই সম্ভব নয়। 

শৃঙ্খলাঃ 

o    নিয়মিত ও পরিমান মতো সুষম খাবার গ্রহন করতে হবে।
o    নিয়মিত ও পরিমান মতো ব্যায়াম বা দৈহিক পরিশ্রম করতে হবে।
o    চিকিৎসকের পরামর্শ এবং ব্যবস্থাপত্র সুষ্ঠুভাবে মেনে চলতে হবে।
o    শরীর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
o    পায়ের বিশেষ যত্ন নিতে হবে।
o    শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
o    চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যাতিত কোন কারনেই ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসা বন্ধ রাখা  যাবে না।
o    বাসায় গ্লুকমিটার রেখে নিজের রক্তের সুগার নিজে পরিমাপ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারলে সবচেয়ে ভালো।

ডায়াবেটিক রোগীর খাদ্যগ্রহণের নিয়মাবলিঃ
o   শরীরের ওজন বাঞ্ছিত ওজনের বেশি থাকলে তা কমিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসা, কম থাকলে তা বাড়িয়ে স্বাভাবিক করা এবং ওজন স্বাভাবিক থাকলে সেটা বজায় রাখা।
o   চিনি মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে।
o   শর্করা বহুল খাবারগুলো (চাল, আটা দিয়ে তৈরি খাবার, মিষ্টি ফল ইত্যাদি) হিসাব করে খেতে হবে।
o   আঁশবহুল খাবার (শাঁক সবজি, টক ফল ইত্যাদি) বেশি করে খেতে হবে।
o   সম্পৃক্ত ফ্যাট যেমন ঘি, মাখন, চর্বি, ডালডা, মাংস কম করে খেতে হবে। পরিবর্তে অসম্পপ্রিক্ত ফ্যাট যেমন উদ্ভিদ তেল, অর্থাৎ সয়াবিন তেল, সরিষার তেল এবং সব ধরনের মাছ খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
o   নির্দেশিত খাদ্যতালিকা দেখে শিখে নিতে হবে।
o   সমান ক্যালরির খাবার রুচি ভেদে পরিবর্তন করে খাওয়া যেতে পারে।
o   নির্দিষ্ট সময়ে খেতে হবে। কোন বেলার খাবার বাদ দেয়া যাবে না। আজ কম, কাল বেশি এভাবে খাবার খাওয়া যাবে না
o   অসুস্থ হলে বিশেষ খাদ্যতালিকা মেনে খাবার গ্রহন করতে হবে।

ব্যায়ামঃ
ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রনের জন্য ব্যায়াম/ শারীরিক পরিশ্রম একান্ত প্রয়োজন। যারা কম পরিশ্রমের কাজ করেন, যেমনঃ অফিসের কাজ, ঘরের কাজ ইত্যাদি,  তাঁদের সপ্তাহিক ভাবে ১৫০ মিনিট দ্রুত গতির হাটা অনুশীলন করতে হবে।

নিয়মঃ প্রতিদিন অন্তত ৩০-৪০ মিনিট হাটা, হাটার শুরুতে ধীর গতিতে হাটা শুরু করে ১০ মিনিট ব্যবধানে ধীরে ধীরে গতি বৃদ্ধি করতে হবে। উদ্দেশ থাকবে নাড়ীর গতি যেন দিগুণ বৃদ্ধি পায়। হাটার শেষে আবার হটাৎ করে থেমে না গিয়ে ধীরে ধীরে গতি থামিয়ে অনুশীলন শেষ করতে হবে। যাঁদের হৃদরোগ আছে তাঁদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। টানা দুই দিন হাটা বাদ দেয়া যাবে না।

ডায়াবেটিসের ঔষধঃ
খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম এবং শৃঙ্খলার পাশাপাশি রোগীদেরকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের জন্য ওষুধ গ্রহনের প্রয়োজনীয়তা প্রায়শই দেখা দেয়। এই ক্ষেত্রে ডায়াবেটিক রোগীর চিকিৎসায় অভিজ্ঞ এমন চিকিৎসক একজন রোগীকে উপযুক্ত সহায়তা প্রদান করতে পারেন।
একই সাথে রোগীর নিজের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের ইচ্ছা এবং প্রচেষ্টা ডায়াবেটিসের চিকিৎসার জন্য অপরিহার্য।  
Share:

এক নজরে...



ডাঃ লালা সৌরভ দাস

এমবিবিএস, ডিইএম (বারডেম), বিসিএস (স্বাস্থ্য)

ডায়াবেটিস, থাইরয়েড এবং হরমোন বিশেষজ্ঞ (এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট)

সহকারী সার্জন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকা

কনসালটেন্ট, ওয়েসিস হাসপাতাল, সিলেট

প্রাক্তন আবাসিক চিকিৎসক (মেডিসিন), পার্কভিউ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

মেম্বার অফ বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটি

মেম্বার অফ আমেরিকান এ্যাসোসিয়েশন অফ ক্লিনিকাল এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট



Subscribe

Recommend on Google

Recent Posts

পুরাতন অধ্যায়গুলো