১৪ই নভেম্বরঃ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস

আগামীকাল, ১৪ই নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। 
ডায়াবেটিস নিয়ে রোগীসহ সর্বসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য নিয়ে দিবসটি আন্তর্জাতিক ভাবে পালন করা হয়ে থাকে। বর্তমানে অসংক্রামক রোগের তালিকায় ডায়াবেটিসের অবস্থান শীর্ষস্থানে। ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেসনের পরিসংখানে পৃথিবীর ৪২৫ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত এবং রোগীর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। জনসচেতনতা ছাড়া এই রোগের নিয়ন্ত্রন কোন ভাবেই সম্ভব নয়। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রোগীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় অনেকগুণ। অল্প বয়েসেই তাই দেখা দেয় হৃদরোগ, স্ট্রোক, চোখের মারাত্মক রেটিনোপ্যাথি, অনুভুতি কমে যাওয়া, পঙ্গুত্ব সহ নানা রোগ। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে না রাখলে, দিন দিন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতায় পরে চিকিৎসা ব্যয় বাড়তে থাকে। এতে করে বিঘ্নিত হয় পারিবারিক এবং সামাজিক জীবন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে তাই সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান আবশ্যক। 



 ২০১৮ সালের ডায়াবেটিস দিবসের প্রতিপাদ্য “পরিবার এবং ডায়াবেটিস”। সহজ করে বলতে গেলে ডায়াবেটিস শুধু রোগীর রোগ নয়, বরং গোটা পরিবারের রোগ। কিভাবে? 



মনে করা যাক, পরিবারে কোন সদস্য ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। গবেষণায় দেখা গেছে, পরিবারে রক্তের সম্পর্ক আছে এমন কারো ডায়াবেটিস থাকলে অন্য সদস্যের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেক গুণ বেড়ে যায়। মা এবং বাবা এমন কারো ডায়াবেটিস থাকলে সন্তান দের ডায়াবেটিস হবার ঝুঁকি দুই থেকে পাঁচগুণ বেড়ে দাড়ায়। তাই, পরিবারে কারো ডায়াবেটিস আছে, বা ধরা পড়া মানে গোটা পরিবারের জন্য সেটি সতর্ক সংকেত। এমতাবস্থায়, গোটা পরিবারের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানোর জন্য সঠিক জীবনযাত্রা এবং শারীরিক পরিশ্রম সহ ব্যায়াম ইত্যাদি আবশ্যক হয়ে দাড়ায়। 


আবার, ডায়াবেটিস রোগী পরিবারে থাকাকে খারাপ ভাবে নেবারও কোন কারন নেই। একজন রোগীর কাছে থেকে পরিবারের অন্য সদস্যরা রোগ সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠতে পারেন। রোগীর সাথে সাথে সুনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রায় অংশগ্রহনের মাধ্যমে নিজেদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমিয়ে নিয়ে আসতে পারেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে সকলেই ডায়াবেটিসের ঝুকিতে আছেন, তাই পরিবারের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত সদস্য গোটা পরিবারের জন্য সচেতনতার নিদর্শন হিসাবে কাজ করেন। সেই সচেতনতা শুধু রুগীকে নয়, বরং গোটা পরিবারের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখতে সাহায্য করে।

আবার একথা ভুলে গেলে চলবে না, ডায়াবেটিস রোগীর রোগ নিয়ন্ত্রনে পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা রাখতে হয়। তাই, ডায়াবেটিক রোগী মানে চিকিৎসা এবং সুস্বাস্থ্য শুধু রোগীর নিজের নয়, বরং গোটা পরিবারের। 

তাই, পারিবারিক ভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন এবং প্রতিরোধে সচেতন হয়ে উঠুন এবং সচেতনতা অন্যদের মধ্যে পৌঁছে দিতে সহায়তা করুন।
Share:

কোন মন্তব্য নেই:

এক নজরে...



ডাঃ লালা সৌরভ দাস

এমবিবিএস, ডিইএম (বারডেম), বিসিএস (স্বাস্থ্য)

ডায়াবেটিস, থাইরয়েড এবং হরমোন বিশেষজ্ঞ (এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট)

সহকারী সার্জন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকা

কনসালটেন্ট, ওয়েসিস হাসপাতাল, সিলেট

প্রাক্তন আবাসিক চিকিৎসক (মেডিসিন), পার্কভিউ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

মেম্বার অফ বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটি

মেম্বার অফ আমেরিকান এ্যাসোসিয়েশন অফ ক্লিনিকাল এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট



Subscribe

Recommend on Google

Recent Posts